সত্যি বলতে কী- বজ্রপাত প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য গুলোর মধ্যে একটি..!!! এটি আবার মানুষের পরিচিত সবচেয়ে ভয়্ংকর প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর একটিও বটে..!!! সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রার প্রায় সমান মাত্রার স্ফুলিঙ্গ আর ভয়াবহ গর্জন বহুকাল ধরেই মানুষের পিলে চমকানোর কাজটি দায়িত্বের সাথে পালন করে আসছে।। বজ্রপাতের এই ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যের সাথে সাথে আমাদের মনে বিজ্ঞানের আরেকটি চিরন্তন রহস্যের জন্ম দেয়,বজ্রপাতের কারণ কি? ছোটবেলায় এই প্রশ্নের কারণ খুঁজতে গিয়ে আমরা বেশিরভাগ সময় এ উত্তর পেয়েছি, মেঘে মেঘে সংঘর্ষের ফলাফল হলো এই বজ্রপাত। আসলেই কী তাই...??? এই ধারণার অবসান-ই লেখাটির উদ্দেশ্য.................
বজ্রপাত সংক্রান্ত যে প্রশ্ন আমাদের মাথায় ঘুর-পাক খায়-
1. কেন বজ্রপাত হয়..?
2. বজ্রপাতের সময় বিদ্যুৎ চমকায় কেন..?
3. বজ্রপাতের সময় শব্দ উৎপন্ন হয় কেন...?
4. বজ্রপাতের সময় কি পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়...?
কেন বজ্রপাত হয়..?
ব্যাখ্যাঃ বজ্রপাতের শাব্দিক অর্থ হল “ভূমিতে বিদ্যুৎ পতিত হওয়া”। তবে সব বজ্রপাতে ভূমিতে বিদ্যুৎ বা চার্জ পতিত হয় না। শুধু মাত্র CG discharging প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বজ্রপাতে ভূমিতে বৈদ্যুতিক চার্জ পতিত হয়। আসলে, পানিচক্রের নিয়মে জলাধারের পানি বাষ্পীভূত হয়ে মেঘ আকারে আকাশে আশ্রয় নেয়। এই মেঘ-ই হল বজ্রপাতের ব্যাটারি। বজ্রপাতের জন্য দায়ী মেঘ বৈদ্যুতিক চার্জের আধারের মত আচরণ করে,যার উপরের অংশ পজিটিভ এবং নিচের অংশ নেগেটিভ চার্জে চার্জিত থাকে। মেঘ কিভাবে চার্জিত হয় তা নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে বেশ মতভেদ থাকলেও সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত মতবাদ হচ্ছে,পানিচক্রে জলকণা যখন ক্রমশ উর্ধ্বাকাশে উঠতে থাকে তখন তারা মেঘের নিচের দিকের বেশি ঘনীভূত বৃষ্টি বা তুষার কণার সাথে সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়। যার ফলে উপরের দিকে উঠতে থাকা অনেক বাষ্প কণা বেশ কিছু ইলেকট্রন হারায়। এই মুক্ত ইলেকট্রন গুলো মেঘের তলদেশে জমা হয় এবং ইলেকট্রন হারানো পজিটিভ চার্জিত বাষ্পকণা মেঘের একেবারে উপরপৃষ্ঠে চলে যায়। যার ফলশ্রুতিতে মেঘগুলো শক্তিশালী ধারক বা ক্যাপাসিটর এর বৈশিষ্ট্য লাভ করে। মেঘের দুই স্তরে চার্জ তারতম্যের কারণে সেখানে শক্তিশালী বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের শক্তি মেঘে সঞ্চিত চার্জের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। এভাবে বাষ্পকণা ও মেঘে সংঘর্ষ চলতে চলতে মেঘের উপরে এবং নিচে যথাক্রমে পজিটিভ ও নেগেটিভ চার্জের পরিমাণ বেরে গিয়ে এতটা শক্তিশালী বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরী করে যে তার বিকর্ষণে পৃথিবীপৃষ্ঠে অবস্থানরত ইলেকট্রন গুলো ভূপৃষ্ঠের আরো গভীরে চলে যায়। ফলাফলস্বরূপ ওই নির্দিষ্ট এলাকার ভূপৃষ্ঠ শক্তিশালী পজিটিভ বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এখন বজ্রপাতের জন্য শুধু যা প্রয়োজন তা হল বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য সামান্য একটু বাহক বা কন্ডাক্টর। কিন্তু আমরা জানি বাতাস বিদ্যুৎ অপরিবাহী,তাহলে বজ্রপাত কিভাবে হবে.....? মেঘের বিপুল শক্তিশালী বিদ্যুতক্ষেত্র তার চারপাশের বাতাসের অপরিবাহী ধর্মকে নষ্ট করে দেয়,যাকে বলে Dielectric Breakdown। মেঘে অবস্থিত বিদ্যুতক্ষেত্র যখন যথেষ্ঠ শক্তিশালী হয়(প্রতি ইঞ্ছিতে প্রায় ১০,০০০ ভোল্ট),তখন তার আশেপাশের বাতাস পজিটিভ এবং নেগেটিভ চার্জে বিভক্ত হয়ে যায়। এই আয়োনিত বাতাস প্লাজমা নামেও পরিচিত। বাতাস আয়োনিত হয়ে মেঘ এবং ভূপৃষ্ঠের মধ্যে বিদ্যুৎ চলাচলের পথ বা শর্ট সার্কিট তৈরী করে দেয় এবং বজ্রপাত ঘটায়।
অন্যভাবে, বলতে গেলে-
1. জলীয়বাষ্প ঘণীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হওয়ার সময় এতে প্রচুর স্থির বৈদ্যুতিক চার্জ (electrostatic charge) জমা হয়।
2. মেঘ কিভাবে চার্জিত হয় তা নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে বেশ মতভেদ থাকলেও সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত মতবাদ হচ্ছে,পানিচক্রে জলকণা যখন ক্রমশ উর্ধ্বাকাশে উঠতে থাকে তখন তারা মেঘের নিচের দিকের বেশি ঘনীভূত বৃষ্টি বা তুষার কণার সাথে সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়। যার ফলে উপরের দিকে উঠতে থাকা অনেক বাষ্প পরমাণু বেশ কিছু ইলেকট্রন হারায়।
3. যে পরমাণু ইলেকট্রন হারায় তা পজেটিভ চার্জে এবং যে পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে তা নেগেটিভ চার্জে চার্জিত হয়।
4. অপেক্ষাকৃত হাল্কা পজিটিভ চার্জ থাকে মেঘের উপর পৃষ্ঠে এবং ভারী নেগেটিভ চার্জ থাকে নিচের পৃষ্ঠে। যথেষ্ট পরিমাণ + ও – চার্জ জমা হওয়ার পর পজেটিভ ও নেগেটিভ চার্জ পরষ্পরকে আকর্ষণের দরুণ electrostatic discharge প্রক্রিয়া শুরু হয়।
5. discharge তিন ভাবে হতে পারে- (ক) মেঘের নিজস্ব + ও – চার্জের মধ্যে (একে বলা হয় intra cloud বা, IC discharge) (খ) একটি মেঘের + কিংবা – চার্জের সাথে অন্য মেঘের – কিংবা + চার্জের সাথে (একে বলা হয় cloud to cloud বা, CC discharging) (গ) মেঘের + চার্জের সাথে ভূমির (একে বলা হয় cloud to ground বা, CG discharging)
6. Discharge হওয়ার সময় + চার্জ থেকে – চার্জের দিকে বাতাসের মধ্য দিয়ে স্পার্ক আকারে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এ ঘটনাই হল বজ্রপাত।
বজ্রপাতের সময় বিদ্যুৎ চমকায় কেন..?
=> ব্যাখ্যাঃ বজ্রপাতের সময় বাতাসের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবিহিত হয়। আমরা জানি বাতাস বিদ্যুৎ অপরিবাহী। কিন্তু মেঘে জমা হওয়া স্থির বিদ্যুৎ এত উচ্চ বিভব শক্তি (১০ মিলিয়ন ভোল্ট পর্যন্ত) উৎপন্ন করে যে, তা বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার জন্য বাতাসের একটা সরু চ্যানেলকে আয়নিত করে পরিবাহী পথ (conductive path) তৈরি করা হয়। আয়নিত পরমাণু থেকে বিকীর্ণ শক্তি তিব্র আলোক ছটা তৈরি হয়।
বজ্রপাতের সময় শব্দ উৎপন্ন হয় কেন...?
=> ব্যাখ্যাঃ Discharge হওয়ার সময় বাতাসের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, একে বলা হয় air breakdown। এ সময় বাতাসের যে চ্যানেলের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবিহিত হয় তার তাপমাত্রা প্রায় ২৭০০০ ডিগ্রি সেঃ (যা সূর্যের তাপমাত্রা থেকে বেশি) এ উন্নীত হয় এবং বাতাসের চাপ স্বাভাবিক চাপ থেকে ১০ থেকে ১০০ গুন পর্যন্ত বেড়ে যায়। এ চাপ এবং তাপমাত্রায় পৌছাতে সময় লাগে মাত্র এক সেকেণ্ডের কয়েক হাজার ভাগের এক ভাগ। এত কম সময়ে তাপমাত্রা ও চাপের এত ব্যাপক পরিবর্তন চারপাশের বায়ু মণ্ডলকে প্রচণ্ড গতিতে (বিষ্পোরণের মত) সম্প্রসারিত করে। এ সময় যে শব্দ তরঙ্গ উৎপন্ন হয় সেটাই আমরা শুনতে পাই।
বজ্রপাতের সময় কি পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়...?
=> ব্যাখ্যাঃ ভূমি থেকে ৩ মাইল দূরতের বজ্রপাত (lightning strike) গড়ে এক বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন জুল শক্তি উৎপন্ন করে। একটি ১০০ ওয়াট বাল্ব ১ সেকেন্ড জ্বালাতে শক্তি খরচ হয় ১০০ জুল। সে হিসেবে, ১০ বিলিয়ন জুল শক্তি দিয়ে ওই বাল্বকে ১১৬০ দিন বা প্রায় ৩৯ মাস অবিরাম জ্বালানো যাবে। বৈদ্যুতিক শক্তি পরিমাপক একক “কিলোওয়াট-আওয়ার” হিসেবে এ শক্তি ২৭,৮৪০ কিলোওয়াট-আওয়ার। বাংলাদেশে একটি পরিবার গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১০০- ১৫০ ইউনিট (কিলোওয়াট-আওয়ার) বিদ্যুৎ ব্যাবহার করে। তার মানে একটি বজ্রপাতের বিদ্যুৎ শক্তি জমা করতে পারলে একটি পরিবার ১৮৫ মাস বা, প্রায় ১৫ বছর বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ ব্যাবহার করতে পারবেন। কী অবাক হলেন...?? লোভে কী জীভে জল আসতে চাচ্ছে...??? আরে শান্ত হোন, চাইলে আপনিও বজ্রপাতকে ট্র্যাপে ফেলে বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ ব্যাবহারের সুযোগ লুফে নিতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে বজ্রপাত ঘায়েল করতে আপনি সময় পাবেন এক সেকেন্ডেরও কম (কারণ বজ্রপাতের পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে)। থেমে নেই বিজ্ঞানীরা। বজ্রপাত থেকে উৎপন্ন বিপুল পরিমাণ তড়িৎ শক্তিকে ধারণ করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের বিষয়ে বিজ্ঞানীরা উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এবং তা বাস্তবায়িত করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন !!!
বজ্রপাতে হতাহতের পরিসংখ্যানঃ
1. বাংলাদেশে বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলসহ দেশের কয়েকটি জেলায় গত এক দশকে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে এই হতাহতের মাত্রা। চলতি বছরের গতকাল ১৫মে পর্যন্ত বজ্রাঘাতে প্রায় ১৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে গত ১২ ও ১৩ মে তে সর্বাধিক ৭০+ নিহত হয়েছেন.......! ফলে অনেকের মন্তব্য হলো ২০১৬সাল টা কী আমাদের জন্য বজ্রপাতের বছর...??
2. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, দুর্যোগ ফোরাম, গণমাধ্যমের তথ্য ও একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হিসাব মতে, গত ৫ বছরে সারা দেশে বজ্রপাতে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
3. আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, গত ৫ বছরে (২০১১-২০১৫) সারা দেশে ৫ হাজার ৭৭২টি বজ্রপাত হয়। এর মধ্যে ২০১১ সালে ৯৭৮, ২০১২ সালে ১ হাজার ২১০, ২০১৩ সালে ১ হাজার ৪১৫, ২০১৪ সালে ৯৫১ ও ২০১৫ সালে ১ হাজার ২১৮ বজ্রাঘাত হেনেছে বাংলাদেশে।
4. বজ্রপাতের কারণ ও প্রকৃতি সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, একেকটি বজ্রপাতের সময় প্রায় ৬০০ মেগাভোল্ট বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। বাসাবাড়িতে আমরা যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছি তার মতা মাত্র ২২০ ভোল্ট। শিল্পকারখানায় ১২শ ভোল্টের বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়। আর জাতীয় গ্রিডে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য মাত্র ১১০ ভোল্ট বিদ্যুৎ যথেষ্ট।
5. বজ্রপাত নিয়ে কাজ করে দুর্যোগ ফোরাম। তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে (৪ এপ্রিল পর্যন্ত) বজ্রপাতে মারা গিয়েছেন ৩৬ জন। ২০১৫ সালে ৪০ শিশু, ২৩ নারী, ১২৩ পুরুষ মিলিয়ে ১৮৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। ২০১৪ সালে ৩৯ শিশু, ২৮ নারী ও ১৪৩ পুরুষ মিলিয়ে ২১০, ২০১৩ সালে ৫৫ শিশু, ৫৩ নারী ও ১৭৭ পুরুষসহ ২৮৫ জন মারা যায়। ২০১২ সালে মারা যায় ৩০১ জন, এর মধ্যে রয়েছে ৬১ শিশু, ৫০ নারী ও পুরুষ। ২০১১ সালে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৭৯ জন, যার মধ্যে ৩১ শিশু, ২৮ নারী ও ১২০ পুরুষ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সংস্থাটি ওই প্রতিবেদন তৈরি করে। ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাট, সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। ব
6. জ্রপাতের সৃষ্টির তথ্যানুযায়ী বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ পেরিয়ে পরের মৌসুমে এমনকি শীতের আগে পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গেই গরম বাতাসে জলীয় বাষ্প ঊর্ধ্বমুখী হয়ে মেঘের ভেতরে যায়। এই জলীয় বাষ্প যত বেশি হবে মেঘের উষ্ণায়ন মতাও অস্বাভাবিক বেড়ে জ্যামিতিক হারে মেঘের সৃষ্টি হবে। বাতাসের এ প্রক্রিয়া ওপর ও নিচে দুভাবে চলতে থাকে। আপ ড্রাফ হলো মেঘের ওপরের স্তর এবং ড্রাউন ড্রাফ মধ্যম ও নিচের। এই মেঘই বজ্রমেঘ। এই দুই মেঘের মধ্যে বৈদ্যুতিক পজিটিভ ও নেগেটিভ বিকিরণে প্রাকৃতিক নিয়মে ব্যালান্স (ভারসাম্য) আনার চেষ্টা হয়। পজিটিভ ও নেগেটিভ মেঘ একত্রিত হয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হলে বজ্রপাত হতে থাকে।
7. রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রের (এসএমআরসি) বিজ্ঞানী মো. আবদুল মান্নানের মতে, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বজ্রপাতের সংখ্যা ও প্রাণহানির দিক দিয়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। সার্কভুক্ত অন্য দেশের তুলনায় মৃত্যুহারও বেশি।
8. ‘যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইটনিং সেফটি ইনস্টিটিউটের’ ২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, প্রতিবছর সারা বিশ্বে বজ্রপাতে যত মানুষের মৃত্যু ঘটে, তার এক-চতুর্থাংশ ঘটে বাংলাদেশে। আর এসএমআরসির তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪০টি বজ্রপাত হয়। এতে বছরে মাত্র ১৫০ বা তার কিছু বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের গবেষকদের পর্যবেণ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে মারা যায় ৫০০ থেকে ৮০০ মানুষ।
বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ ও সেগুলো মোকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপঃ
দুর্যোগবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পুরো বৈশিষ্ট্য নিয়েই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। অবশ্য বজ্রপাতকে এখনো সরকারিভাবে দুর্যোগের তালিকাভুক্ত করা হয়নি। ফলে বজ্রপাতে নিহতদের পরিবার সরকারিভাবে তেমন ক্ষতিপূরণ পায় না। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, দেশে বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ নিয়ে সরকারি উদ্যোগে তেমন কোনো গবেষণা নেই। তবে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সামান্য বৃষ্টিপাত বা ঝড়ো বাতাসেও ঘটছে বজ্রপাতের ঘটনা। এ অস্বাভাবিকতার কারণ হিসেবে তারা ‘কালো মেঘ’ বেড়ে যাওয়াকে চিহ্নিত করেছেন। কালো মেঘ সৃষ্টির পেছনে বাতাসে নাইট্রোজেন ও সালফার গোত্রের গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই সালফার গোত্রের গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ৬৪-১৪৩ মাইক্রোগ্রাম সালফার ডাই-অক্সাইড বিদ্যমান। আর প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড রয়েছে ২৫-৩২ মাইক্রোগ্রাম, যা স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এটিই বজ্রপাতকে ত্বরান্বিত করে। একই সঙ্গে মোবাইল ফোন অপারেটরের টাওয়ারকেও বজ্রপাতের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছেন কেউ-কেউ। দেশের প্রবীণ নাগরিকরাও বলছেন, তাদের জীবদ্দশায় এত বজ্রপাতের ঘটনা তারা দেখেননি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে বজ্রপাত অন্তত ১৫ শতাংশ এবং ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে ৫০ শতাংশেরও বেশি হতে পারে। কয়েকটি দেশের হিসাব কষে এই ফল দেওয়া হয়েছে। কঙ্গোয় ভূমি থেকে এক হাজার মিটারেরও বেশি উচ্চতায় কিফুকা পর্বতের এক গ্রামে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় বছরে প্রতি বর্গকিমিতে দেড়শ বার। পরবর্তী অবস্থানে আছে ভেনিজুয়েলা উত্তর ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের ফোরিডা। বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ৪৫ বার বজ্রপাত হয়। সেই হিসাবে বছরে এ সংখ্যা প্রায় দেড়শ কোটি বার। বিশেষজ্ঞদের মতে, আকাশে মেঘ হলে তার ২৫ থেকে ৭৫ হাজার ফুটের মধ্যে বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে। এ এলাকায় তড়িৎ প্রবাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংঘর্ষ ঘটে। এখানে খাড়াভাবে যে বজ্রপাতের সৃষ্টি হয় তার তাপমাত্রা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট। বজ্রপাতের গতিও প্রতি সেকেন্ডে ৬০ হাজার মিটার বেগে নিচে বা ওপরের দিকে চলে যায়। ফলে এ পরিমাণ তাপসহ বজ্রপাত মানুষের দেহে আঘাত হানার সঙ্গে-সঙ্গেই মৃত্যু হওয়া স্বাভাবিক। সাধারণত আকাশের ৪ মাইল সীমার মধ্যে মেঘের সৃষ্টি হয়। এ সীমার ওপরে পানি, বাতাস থাকলেও তা ঠা-া এবং হাল্কা পরিমাণে থাকে। আকাশের এ সীমার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মেঘের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে কালো বা ঘন কালো মেঘ থেকে বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে বিকালের দিকেই এ ধরনের মেঘ বেশি সৃষ্টি হতে দেখা যায়। অন্য সময়ে সংঘটিত মেঘে বজ্রের আওয়াজ থাকলেও বজ্রপাতের ঘটনা কম থাকে। সূর্যতাপ না থাকায় এবং ঠা-া আবহাওয়ার কারণে রাতের বেলায় বজ্রপাতের ঘটনা খুব কম হয়। গ্রামাঞ্চলে বজ্র প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করে বিশাল বৃক্ষ। এই বড় গাছ এখন খুবই কম। কালেভদ্রে বিশাল বট-পাকুড় আম জাম শিমুল কাঁঠাল চোখে পড়ে। বৃষ্টির সময় বিদ্যুতের ঝলকানি ও মেঘের গর্জনের মধ্যে গৃহবধূ উঠানে কাজ করে। কৃষক মাঠে থাকে। খোলা মাঠে ও উঠানে বিদ্যুৎ-আক্রান্ত হয় বেশি। বর্তমানে কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। আকাশে ঝলসানো বিদ্যুৎ এসব ধাতব বস্তুর সংস্পর্শে দ্রুত চলে আসে। বাংলাদেশে বজ্রপাতের হার বেড়ে মৃত্যুর সংখ্যা দিনে-দিনে বাড়ছে তা রোধে কোনো ব্যবস্থা নেই। সচেতনতাও গড়ে তোলা হয়নি। ভূমিকম্পের সময় কী করণীয় তার প্রচার হয়। বজ্রপাত থেকে রা পাওয়ার কোনো ধারণাও দেওয়া হয় না। তবে আকাশে ঘনকালো মেঘ দেখার সঙ্গেই প্রস্তুতি নেওয়া, মেঘের ডাক শুনলেই নিরাপদে যাওয়া। পাকা বাড়ি সাধারণত নিরাপদ। ফসলের মাঠ, ফাঁকা মাঠ, উঠান, সৈকত, পাহাড়, গাছের নিচে বিদ্যুতের খুঁটির নিচে দাঁড়ানো বা নিচে দিয়ে যাওয়া বিপজ্জনক। বজ্রপাতের সময় ধাতব বস্তু স্পর্শ করা ঠিক নয়। এমনকি টিভি ফ্রিজ পানির মোটর বন্ধ থাকলেও তার স্পর্শ থেকে সাবধানে থাকা ভালো। এ সময় বৈদ্যুতিক ঝরনায় গোসল করা ঠিক নয়। পাকা বাড়ি হলেও তার ধাতব জানালায় হাত রাখা বিপদ হতে পারে। বিদ্যুতের সুইচ অফ রাখা বাঞ্ছনীয়। তারযুক্ত ফোন এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারও ঠিক নয়। কারণ মোবাইল ফোনের টাওয়ার বজ্রপাত টেনে নেয়।
বজ্রপাতের সময় যা করবেনঃ বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু করণীয় বজ্রপাতে কী করবেন? বাংলাদেশে মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বজ্রঝড় হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে গড়ে দুই থেকে তিনশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু করণীয় বজ্রপাতে কী করবেন? বাংলাদেশে মার্চ থেকে মে এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বজ্রঝড় হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে গড়ে দুই থেকে তিনশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
যাইহোক, বৈশ্বিক উষ্ণতা বজ্রপাতের কম্পাঙ্ক লক্ষণযোগ্য হারে বৃদ্ধি করছে। আমাদের দেশেও এ মৌসুমে বজ্রপাতের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিবছরই বজ্রপাতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এ থেকে রক্ষা পেতে করণীয় দিকগুলো আলোচনা করা হলো-
1. বজ্রপাতের আগ মুহূর্তের লক্ষণঃ বজ্রপাত হওয়ার আগ মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণে কোথায় তা পড়বে তা বোঝা যেতে পারে। যেমন বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে, ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে। এ সময় আশপাশের ধাতব পদার্থ কাঁপতে পারে। অনেকেই এ পরিস্থিতিতে ‘ক্রি ক্রি’শব্দ পাওয়ার কথা জানান। আপনি যদি এমন পরিস্থিতি অনুভব করতে পারেন তাহলে বজ্রপাত হবে এমন প্রস্তুতি নিন।
2. খোলা বা উঁচু স্থান থেকে দূরে থাকাঃ ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না। পাকা দালানের নিচে আশ্রয় নেয়াই সুরক্ষার কাজ হবে।
3. উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুৎ লাইন থেকে দূরেঃ থাকা কোথাও বজ্রপাত হলে উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এসব স্থানে আশ্রয় নেয়া যাবে না। যেমন- খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন একটি যাত্রী ছাউনি, তালগাছ বা বড় গাছ ইত্যাদি।
4. জানালা থেকে দূরে থাকাঃ বজ্রপাতের সময় ঘরের জানালার কাছাকাছি থাকা যাবে না। জানালা বন্ধ রেখে ঘরের ভেতর থাকতে হবে।
5. ধাতব বস্তু স্পর্শ না করাঃ বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করা যাবে না।
6. বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রের ব্যবহার থেকে বিরত থাকাঃ বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরা যাবে না। বজ্রপাতের আভাষ পেলে প্লাগ খুলে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখতে হবে।
7. গাড়ির ভেতর থাকলেঃ বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে থাকলে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নেয়া যে পারে। গাড়ির ভেতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
8. গগণচুম্বী স্থান থেকে নিজেকে সরাতে হবেঃ এমন কোনো স্থানে যাওয়া যাবে না। যে স্থানে নিজেই ভৌগলিক সীমার সবকিছুর উপরে। মানে আপনিই সবচেয়ে উঁচু। এ সময় ধানক্ষেত বা বড় মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি নিচু হয়ে যেতে হবে। বাড়ির ছাদ কিংবা উঁচু কোনো স্থানে থাকলে দ্রুত সেখান থেকে নেমে যেতে হবে।
9. পানি থেকে দূরে থাকাঃ বজ্রপাতের সময় নদী, জলাশয় বা জলাবদ্ধ স্থান থেকে সরে যেতে হবে। পানি বিদ্যুৎ পরিবাহী তাই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে!
10. পরস্পর দূরে থাকতে হবেঃ বজ্রপাতে সময় কয়েকজন জড়ো হওয়া অবস্থায় থাকা যাবে না। ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যেতে হবে। কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যাওয়া যেতে পারে।
11. নিচু হয়ে বসাঃ যদি বজ্রপাত হওয়ার উপক্রম হয় তাহলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে চোখ বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু এ সময় মাটিয়ে শুয়ে পড়া যাবে না। মাটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।
12. রবারের বুট পরিধানঃ বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। এ সময় বিদ্যুৎ অপরিবাহী রাবারের জুতা সবচেয়ে নিরাপদ।
13. বাড়ি সুরক্ষিত করতে হবেঃ বজ্রপাত থেকে বাড়িকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিতে হবে। ভুলভাবে স্থাপিত রড বজ্রপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
14. বজ্রপাতে আহত হলেঃ বজ্রপাতে আহত কাউকে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতোই চিকিৎসা করতে হবে। দ্রুত চিকিৎসককে ডাকতে হবে। হাসপাতালে নিতে হবে। একই সঙ্গে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ জরুরি। যা সহজেই জেনে নেয়া যেতে পারে ।
পরিশেষে, বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়- এ বিষয়ে ধারণা থাকা খুবই জরুরি। মৌসুমী বায়ু প্রবেশের আগ মুহূর্তে ঘন কালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে। রাস্তায় থাকাকালীন মেঘের আওয়াজ শুনলেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। পাকা বাড়িতে আশ্রয় বেশি নিরাপদ। গাড়ির ভেতরেও আশ্রয় নেয়া যেতে পারে। বজ্রপাতের আগ মুহূর্তের লক্ষণগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত। আশপাশে বজ্রপাত হওয়ার আগ মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণে তা বোঝা যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য বজ্রপাত প্রাকৃতিক চার্জ হিসেবে কাজ করে। বজ্রপাতকে কখনোই প্রতিরোধ করা যাবে না। তবে উপস্থিত বুদ্ধি ও কৌশল জেনে কাজে লাগালে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
[অনলাইন অবলম্বণেঃ Hossain Muhammad Jony ]
No comments:
Post a Comment